জনাব মোহাম্মদ আলী যে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকঃ শাহবাজপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ১৯০৭ সালের কথা। ব্রিটিশ আমলে ঐতিহ্যবাহী শাহবাজপুর গ্রামের ধনাঢ্য পরিবারের স্বনামধন্য মিয়া বাড়ির শ্রী এফাজত উল্লাহ মিঞা প্রথম বিদ্যালয়ের জমিদান করেন। কথিত আছে, বিদ্যালয়টি ১৮৮৬ সালে ‘মাইনর স্কুল হিসেবে এ গ্রামের চৌধুরী পাড়ায় প্রথম শুরু হয়। এ গ্রামের ডেপুটি বাড়ির ফরিদ উদ্দিন আহাম্মদ বিদ্যালয়ের জন্য কিছু জায়গা দান করেন। মতান্তরে, বিদ্যালয়ের বর্তমান স্থানটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ভারতবর্ষের অধীনে ছিল। এখানে প্রতি সপ্তাহে ২ দিন নির্ধারিত হাট (বাজার) বসত। পরবর্তিতে পরিবর্তন করে এ জায়গায় বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়েছে বলে লোকমুখে প্রকাশ। বর্তমানে বিদ্যালয়ের মোট জায়গার পরিমাণ ২.৮৮ একর। বিদ্যালয়টির বিরাট খেলার মাঠসহ শিক্ষিত এলাকা হিসেবে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজমান। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে মনোরম পরিবেশে বিদ্যালয়টির অবস্থান। চলমান শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়ে আসছে। বিদ্যালয়টিতে ১১টি শ্রেণি শাখা সহ প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে পিএসসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র চালু আছে। এ বিদ্যালয়টির শিক্ষকমণ্ডলীর নিরলস পরিশ্রমে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে আন্তরিক। বিদ্যালয়টি ১৯৩৭ সালে প্রথম মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। বিদ্যালয়টিতে বিজ্ঞান বিভাগ, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ এবং মানবিক বিভাগ চালু আছে। ক্রীড়া ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বিদ্যালয়টির অবদান অনস্বীকার্য। স্বাধীনতার পূর্বে এবং পরে বিভিন্ন বছরে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারী শিক্ষার্থীর অনেকেই কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে মেধা তালিকায় ১ম, ২য় ও অন্যান্য স্থান অধিকার করে বিদ্যালয়টির সুনাম বৃদ্ধি করেছেন। বর্তমানেও এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চলছে এবং ফলাফল সন্তোষজনক হচ্ছে। বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিগণ যখন যারা সভাপতি হয়ে আসেন তিনি তার কমিটির অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে বিদ্যালয়টি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে আসছেন। শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রধান শিক্ষক সহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ, এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ, অভিভাবকগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও স্টকহোল্ডারগণ বিদ্যালয়টিতে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করণে নিবেদিত প্রাণ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। শতবছরের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী শাহবাজপুর বহুমুখী উচ্চ উিন্নয়নের জন্য আলী জান বিদ্যালয়টিকে একটি মডেল বিদ্যালয় হিসেবে রূপ দিতে তা বহুবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট দুর করতে পেরেছি, প্রত্যাশানুযায়ী শাখা অনুমোদন এনেছি, এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র এনেছি, আংশিক ডিজিটাল ক্লাস নিশ্চিত করতে পেরেছি, ভৌতিক অবকাঠামোর কিছুটা উন্নয়ন করতে পেরেছি, লাইব্রেরীতে পর্যাপ্ত বইয়ের ব্যবস্থা করতে পেরেছি, বিজ্ঞানাগারটি একটি পর্যায়ে পৌছিয়েছি, বিদ্যালয়টিতে একটি ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করতে পেরেছি, শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে পরীক্ষামূলক ভাবে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে একটি ক্যানটিন স্থাপন করতে পেরেছি, শিক্ষার্থীদের সততা বিকাশে বিদ্যালয়ে ‘সততা স্টোর’ও স্থাপন করেছি, বিদ্যালয়ের ওয়াই-ফাই সংযোগ দিয়েছি ।
এরপরও বিদ্যালয়টির সার্বিক কল্যাণে প্রাথমিক ভাবে নিম্নোক্ত পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে:
১। বিদ্যালয়টিকে ম্যাধ্যমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক/ কলেজে উন্নীত করা।
২। শিক্ষার্থীদের নিবিড় পর্যবেক্ষনে রেখে আকর্ষণীয় ফলাফল নিশ্চিত করণে শিক্ষার্থীদের জন্য স্বতন্ত্র হোস্টেলের ব্যবস্থা করণ।
৩। বিদ্যালয়ের পূর্ব দিকের বিশাল জলাশয় মাটি দিয়ে ভরাট করে শিক্ষক-কর্মচারীদের আবাসন সহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা।
৪ । বিদ্যালয়ের বিশাল খেলার মাঠটি সংস্কার, আধুনিকায়নসহ নিয়মিত খেলাধূলার আয়োজন নিশ্চিত করণ।
৫। বিদ্যালয়ের আইন শৃংখলা, শিক্ষক-কর্মচারীদের কার্যক্রম অধিকতর গতিশীল করণের লক্ষে বিদ্যালয় অভ্যন্তর, শ্রেণিকক্ষ ও মূলফটকে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করণ করেছি।
৫। শিক্ষক, শিক্ষার্থী কর্মচারীদের ডিজিটাল হাজিরা নিশ্চিত করণ।
ও। বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে মাঝারী ধরণের একটি মঞ্চ তৈরি করণ।
প্রকাশিতব্য গ্রন্থ ‘কীর্তিমান গুণী শিক্ষকদের জীবনালেখ্য। শিক্ষাতথ্য
ঞ্জ। সভা, সেমিনার, বিদ্যালয়ের নিজস্ব অনুষ্ঠানের জন্য বিদ্যালয়ের যেকোনো তলায় হল রুমের ব্যবস্থা করণ ।
৮। বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানাগার ও লাইব্রেরী আধুনিকায়ন করে ‘জ্ঞানাগার’ কেন্দ্র হিসেবে পরিনত করণ।
৯ । প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে ডিজিটাল কনটেন্ট এর মাধ্যমে ক্লাস বাস্তবায়ন করণ।
১৪ । বিদ্যালয়ের পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ দিকে বহুতলা বিশিষ্ট শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করে অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন করণ।
১২। বিদ্যালয়ের ফলাফলের উন্নয়ন এবং বিদ্যালয়টিকে একটি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ হিসেবে রূপান্তর করণ।
১৫। শিক্ষার্থীদের জন্য নামাজঘর ও বিনোদনের ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য স্বতন্ত্র কমনরুম এর ব্যবস্থা করণ।
১৪। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশে স্কুল ম্যাগাজিন প্রকাশ করা।
১৪। শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করে তাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করণ।
১৪। বিদ্যালয়টির শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান উদ্যাপন করণ।
১৯। বিদ্যালয়ের মূল ফটকটি আধুনিকায়নসহ ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য আলাদা প্রবেশ ও বাহির পথ নিশ্চিত করণে আরেকটি ফটক নির্মাণ করণ । (প্রতিটি মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই একাধিক ফটক রয়েছে)
১৭। বিদ্যালয়ে আইসিটি, গণিত, ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ, স্কাউটস, গার্ল ইন স্কাউটস, রেডক্রিসেন্ট, ভাষা সংঘ, সততা সংঘ, বিজ্ঞান, বিতর্ক, জেনারেল নলেজ ক্লাব, নৈতিক মূল্যবোধ ও আচরণ বিধি উন্নয়ন ক্লাব গঠন এবং এর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণ।